বগুড়ার শিবগঞ্জে হাতকড়াসহ পুলিশের কাছ থেকে নাশকতা মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেনকে ছিনিয়ে নিয়েছে তার পরিবার সহ গ্রামবাসী।প্রায় আট ঘন্টা অভিযান চালিয়েও তাকে গ্রেফতার করতে না পারলেও বাঁশঝাড় থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় হাতকড়া উদ্ধার করেছে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের জাবারীপুর বাজারে।
ফারুক হোসেন জাবারীপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে এবং মোকামতলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ উপজেলার মোকামতলা বন্দরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হামলা, হত্যাচেষ্টা ও নাশকতার ২৩ নং মামলার ১০৩ নং আসামি ফারুক হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফারুক হোসেন জাবারীপুর বাজারে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় শিবগঞ্জ থানার এএসআই তাহের ও মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ৬/৭ সদস্য অভিযান চালিয়ে ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। পরে হাতে হাতকড়া পরিয়ে থানায় আনার সময় তার পরিবারের সদস্যরা পুলিশের পিকআপ ভ্যানে উঠে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে ওই গ্রামের ৩/৪শ নারী-পুরুষ পুলিশকে ঘেরাও করে তাকে ছিনিয়ে নেয়।
ফারুক হোসেন এর স্ত্রী তাসলিমা বলেন, তার স্বামী নিরীহ মানুষ, তাকে অযথা গায়েবি মামলায় আসামি করে হয়রানি করা হচ্ছে। গ্রেফতার এর সময় ওয়ারেন্ট এর কাগজ দেখতে চাইলে পুলিশ কাগজ দেখাতে পারেনি এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামবাসীরা আমার স্বামীকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়।
এদিকে ভোর পর্যন্ত ওই গ্রামে তল্লাশি চালিয়েও ছিনিয়ে নেয়া আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে ভোর চারটার দিকে স্থানীয় একটি বাঁশঝাড় থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় হাতকড়াটি উদ্ধার করে পুলিশ।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু প্রত্যক্ষদর্শী জানায়,আসামিকে যখন পুলিশ গ্রেফতার করতে পারছিলো না, তখন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা পুলিশের কাছ থেকে হাতকড়ার চাবি নিয়ে সেটি উদ্ধার করে।
শিবগঞ্জ থানার এএসআই আবু তাহের বলেন,ফারুক হোসেনকে গ্রেফতার করার সময় ওয়ারেন্ট এর কাগজ দেখালেও তার পরিবারের সদস্যসহ ৩/৪ শ নারী পুরুষ লাঠি শোঠা নিয়ে আমাদেরকে আটক করে আসামি ছিনিয়ে নেয়।তিনি আরও বলেন,হাতকড়ার চাবি যেহেতু আমার কাছে ছিলো এটি অন্য কাউকে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
শিবগঞ্জ থানার ওসি আবদুল হান্নান আসামি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ৩/৪ শ নারী-পুরুষ পুলিশকে আটক করে আসামি ছিনিয়ে নিয়েছে। আমাদের পুলিশ ছিল মাত্র ৬/৭ জন। ঘটনার পর আমরা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে বাঁশঝাড় থেকে হাতকড়াটি উদ্ধার করেছি। আসামিকে গ্রেফতার করার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।