বগুড়ার শিবগঞ্জে বিদ্যুৎ এর সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও ডিজেল চালিত পাম্প ব্যবহার করে প্রায় ১শত ২৫ বিঘা কৃষি জমিতে সেচ দিতে বাধ্য হচ্ছেন শতাধিক কৃষক। এতে অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে, যা উৎপাদন ব্যয় বাড়াচ্ছে এবং কৃষকদের আর্থিক সংকটে ফেলছে। সঠিক ভাবে সেচ সুবিধা না পেলে হুমকির মুখে পড়বে বোরোধান চাষ। গভীর নলকূপের মালিকানা দ্বন্দ্বের জেরে বিদ্যুতের সেচ সুবিধা পাচ্ছে না কৃষক।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার আটমুল ইউনিয়নের জগদীশ পল্লী উন্নয়ন সমবায় সমিতির মাধ্যমে কৃষি জমিতে সেচ কাজ পরিচালনা জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। এক সময় সমবায় সমিতি ঋন গ্রস্থ হয়।সমিতির সদস্যরা ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে। ওই সমিতির সদস্য নিজাম উদ্দিন সকলের সম্মতিতে রেজুলেশন এর মাধ্যমে সদস্যের কাছে থেকে ঋণ পরিশোধের শর্তে গভীর নলকূপ মালিকানা লেখে নেয়। বিআরডিবি থেকে নেয়া ১লাখ ৫০ হাজার টাকার ঋন পরিশোধ করে ২০০২ ইং সালে মালিকানা বুঝে পাই। সেই থেকে সেচ কাজ পরিচালনা করে আসছে। প্রতিপক্ষ আবু রায়হান সহ কয়েকজন তা অস্বীকার করে পেশি শক্তির জোরে গভীর নলকূপ দখল করে নেয়। পরিকল্পিত ভাবে আগুন লাগিয়ে বিদ্যুতের মিটার ও তার জালিয়ে দেয়। সেই থেকে তারা বিদ্যুতের পরিবর্তে ডিজেল চালিত পাম্প দিয়ে সেচ কাজ পরিচালনা করছে। প্রকৃতপক্ষে তাদের নামে গভীর নলকূপ কোন কাগজপত্র নাই। এই কারণে বিদ্যুতের সংযোগ পাচ্ছে না তারা। ফলে নির্ভরযোগ্য সেচের জন্য ডিজেল চালিত পাম্পের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু ডিজেলের উচ্চমূল্যের কারণে সেচ খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। তবে প্রতিপক্ষ আবু রায়হান বলেন নিজাম উদ্দিন গভীর নলকূপের ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকাকালীন সময় চালাকি করে নিজের নামে কাগজপত্র করে নেয়।
এবিষয়ে স্থানীয় কৃষক জাহিদুল, এনামুল হক, কামরুল হাসান, আফতাব কাজি,আব্দুর রশিদ, মুনসুর রহমান, আব্দুর রহমান, আজম আলী আরও বেশ কিছু ভুক্তভোগী কৃষক বলেন, বোরো ধানের মৌসুমে বিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্পের খরচ আলু ও ধান মিলে প্রতি শতক ৬০-৭০ টাকা আর ডিজেল চালিত পাম্পের খরচ প্রতি শতক ১০০ টাকা বেশি। তাদের দ্বন্দ্বের জেড়ে বেশি দামে ডিজেল চালিত পাম্পে সেচ নিতে বাধ্য হচ্ছে কৃষক। কৃষিতে উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে। ভুক্তভোগী কৃষকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এবিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের (ডিজিএম) সহকারী কর্মকর্তা এমাজউদ্দীন সরদার বলেন, বিষয়টা আমার জানা নেই, আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, এবিষয়ে শুনেছি পক্ষে বিপক্ষে মামলা রয়েছে। তবে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছি, যাতে কৃষক দ্রুত বিদ্যুতের মাধ্যমে সেচ সুবিধা পায়।