বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
আদর্শিক নেতৃত্বের আলোকবর্তিকা মোহাম্মদ মুনতাসীর আহমেদ জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের বৈঠকে ইউপিডিএফের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্রস্তাব দেশদ্রোহীতার শামিল- পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ,বান্দরবান পার্বত্য জেলা। ব্রহ্মপুত্র ন‌দে একসাথে ভেসে উঠলো নি‌খোঁজ দুই শিশুর মরদেহ পাঁচবিবি থানার এসআই কে কাঁচি দিয়ে আঘাত করার ঘটনায় ২জন গ্রেপ্তার বড় খামারীদের পাশাপাশি কোরবানির পশু প্রস্তুতে ব্যস্ত প্রান্তিক নারী উদ্যোক্তরা সাংবাদিক মোশারফ মফিজ উদ্দিন ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি মনোনীত মনোহরদী (উত্তর) জামায়াতের ওয়ার্ড সভাপতি-সেক্রেটারি সম্মেলন অনুষ্ঠিত! জিএসটি ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১৩ মে সন্ধ্যায়, খুব শিগগিরই চূড়ান্ত ভর্তি আবেদন শুরু মনোহরদী মডেল হিফজুল কোরআন মাদরাসায় নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত! রাজশাহীর ২ সাবেক চেয়ারম্যানের দেশ ত্যাগে নিষেধ

নির্মাণের দুই বছরেই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে মাভাবিপ্রবির শেখ রাসেল হল

মো.জিসান রহমান, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৫৩ Time View

টাংগাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যা ও অব্যবস্থাপনার মধ্যে বসবাস করে আসছেন।  ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে শিক্ষার্থীরা থাকতে শুরু করেন হলটিতে। প্রতিষ্ঠার দুই বছরের মাথায় ধীরে ধীরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে শেখ রাসেল হল।

শিক্ষার্থীরা জানান, হলে যে খাবার পরিবেশন করা হয় তার মান খুব একটা ভালো নয়। কোনো রকমে খেয়ে দিন পার করছেন তারা। দীর্ঘদিন যাবৎ ইন্টারনেট সমস্যায় ভুগছেন তারা। পাশাপাশি হলের বিদ্যুৎ সংযোগ, সুইচ, লাইট খুবই নিম্নমানের যা প্রায়শই পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে। বারবার অভিযোগ জানানো হলেও এখন পর্যন্ত মিলছে না কোনো কার্যকর সমাধান।

সবথেকে বড় সমস্যা হিসাবে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, হলের ওয়াশরুম, বেসিন ও গোসলখানাগুলো দীর্ঘদিন ধরে অপরিচ্ছন্ন ও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। নিয়মিতভাবে এসব জায়গা পরিষ্কার না করায় পরিবেশ হয়ে উঠেছে অস্বাস্থ্যকর। রুমগুলোর সামনের বারান্দায় মাসের পর মাস ময়লার স্তূপ জমে থাকলেও সেগুলো পরিষ্কারের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। হলের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাজ না করেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে বেতন নিচ্ছেন নিয়মিতভাবে। ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কাজ করার কথা থাকলেও তার আগেই চলে যান তারা। তৎকালীন ভিসির কাছে পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগের দাবি জানানোর পর ৬ জন নিয়োগের কথা থাকলেও নিয়োগ দেওয়া হয় ৪ জনকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হলের বিভিন্ন দেয়ালে ধরেছে বড় বড় ফাটল, দেওয়ালে রঙে ধরেছে মরীচিকা, ফ্লোরে টাইলসগুলোতে দাগ ও ময়লা জমে কালো হয়ে গেছে, দুর্গন্ধে যাওয়া যাচ্ছে না কিছু কিছু যায়গায়, হলে নেই গ্যাস সংযোগ লাকড়ির মাধ্যমে চলছে খাবার রান্নার কাজ, কচ্ছপের গতিতে চলছে ইন্টারনেট, হলের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ দিন দিন আরও নাজুক হয়ে পড়ছে।

রাসেল হল মনিটরিং টিম এর সদস্য রাকিবুল ইসলাম রাব্বি জানান, “আমাদের হলের সুইপারদের ডেইলি বেসিসে টাকা দেয় ৩৫০ টাকা করে। এমন দিন গেছে ক্যাম্পাসের বাহিরে অন্য জায়গায় ডেইলি বেসিস টাকার থেকে ঐজয়গায় টাকা বেশি পায় ওইদিন আসে না। তখন আবার কাজের গ্যাপ পড়ে যাওয়ায় কাজের চাপ বাড়ে । ফলে ৪ জন মিলে পরিষ্কার করা সম্ভব হয়না। আবার কয়েকজন সুইপার কাজের প্রতি অনিহা দেখিয়ে দিনের অর্ধেক কাজ করে চলে যায়। প্রভোস্ট স্যারের কাছে আমরা অভিযোগ দেওয়ার পর বলেছেন এতো কম টাকায় কাজ করতে কেও আগ্রহ প্রকাশ করে না।”

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আরাফাত তরফদার বলেন,  “শেখ রাসেল হল যখন শুরু হয়েছিল, তখন আমরা হলে উঠি। ডাইনিং চালুর সময় হলে কোন ওয়াইফাই সংযোগ ছিল না। তখন তৎকালীন স্যার বলেছিলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে ওয়াইফাই ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। সেটা ছিল ২০২৩ সাল এখন ২০২৫ সাল চলছে, কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা হয়নি। আমরা প্রভোস্ট স্যারকে একাধিকবার জানিয়েছি, কিন্তু তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। ছাত্ররা বারবার অভিযোগ করেও সমস্যার সমাধান পাচ্ছে না। যাকে হল নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সে কাজটা ভালোভাবে করেনি। আমি যখন হলে উঠি, তখন থেকেই আমার রুমের সুইচ নষ্ট ছিল। এখন দেয়ালগুলো ফাটল ধরেছে, টাইলস ভেঙে পড়েছে, জানালার গ্লাস ভেঙে গেছে, বেসিন অকেজো হয়ে গেছে। আমাদের মনে হয়, যদি কোনো বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়, তাহলে শেখ রাসেল হল টিকবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ আছে।”

আরেক শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ রাহাত জানান, “আমরা শেখ রাসেল হলের ওয়াশরুমগুলো ব্যবহার করতে পারি না, কারণ সেগুলো অত্যন্ত নোংরা ও অনুপযোগী অবস্থায় রয়েছে। এই বিষয়ে আমরা বারবার হলের প্রভোস্ট স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু তিনি সবসময় লোকবল সংকটের কথা বলে দায় এড়াচ্ছেন।ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা। হলের বিভিন্ন রুমে দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে, অনেক জায়গায় বিদ্যুতের সুইচ নষ্ট, বাথরুমের টাইলস ভাঙা এবং বেসিনগুলোও অকেজো অবস্থায় রয়েছে। এতসব সমস্যার পরেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি না।”

নিচতলায় অবস্থানরত শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলেন, “শেখ রাসেল হলের বাথরুমগুলো সময়মতো পরিষ্কার করা হচ্ছে কিনা, তা হলের তত্ত্বাবধায়ক থাকা কর্মী দেখভাল করে না। প্রভোস্ট স্যারকে জানানো হয়েছে, প্রভোস্ট স্যার বলেন কিন্তু কোনো প্রকার পদক্ষেপ নিতে আমরা দেখি না।”

বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ সম্পর্কে শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট ড. মো. আবু রাশেদ জানান, “এই হল একটি নবনির্মিত হল, এই হলে বেশ কিছু সমস্যা আছে, এর মধ্যে মূল সমস্যা হচ্ছে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন। যখন হলটি নির্মাণ করা হয় তখন থেকে এই হলে গ্যাস সংযোগ নেই। আমরা গ্যাস সংযোগকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি কিন্তু সরকারি ভাবে যখন আবার গ্যাস সংযোগ দেওয়া শুরু হবে তখনই আমরা গ্যাস সংযোগ পাব। তারপরও আমরা প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি গ্যাস সংযোগ আনার ব্যাপারে। এই হল নির্মাণ কাজে বেশি কিছু সমস্যা পেয়েছি আমরা, এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কমিটি কাজও শুরু করেছে।
হলের ইন্টারনেট সংযোগের ব্যাপারে ইতিমধ্যে আইসিটি সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আইসিটি সেল জানিয়েছে যে সরকারি প্রজেক্ট আসলে তখন ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া যাবে।
হলের ডাইনিং এবং ক্লিনিং সমস্যার একটা বড় কারণ লোকবল কম। ক্লিনিংয়ে দায়িত্বরত কর্মীদের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা বলছে আগামী দুইমাসের মধ্যে সবকিছু তারা ঠিকঠাক করবে। আমি আশা করি যে, শিক্ষার্থীরা এবং হল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় শেখ রাসেল হলকে একটি উন্নত আবাসন ব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।”

অতিদ্রত এসব সমস্যার সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শেখ রাসেল হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 nctelevision.com
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin