রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মোঃ আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির (২১) নামের এক যুবককে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া থেকে তাকে আটক করা হয়।আটককৃত মুক্তাদির রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার সপুরা এলাকার বাসিন্দা মো. সাব্বির আলমের ছেলে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মাশরেফ আহসান নামের এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ধাপে ধাপে ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
ভুক্তভোগী মাশরেফ আহসান জানান, মুক্তাদির তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের একজন শিক্ষকের ‘বিশেষ কোটা’র কথা বলে আশ্বস্ত করেন এবং বিভিন্ন সময়ে ভর্তি সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র সরবরাহ করেন। পরে সন্দেহ হলে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের সঙ্গে যাচাই করে জানা যায় সকল কাগজপত্র জাল।
ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী, প্রতারক দাবি করেন যে তিনি রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. হারুনুর রশিদের পরিচিত এবং তার মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করবেন। কিন্তু ড. হারুনুর রশিদ বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এটি নিঃসন্দেহে আমার নাম ব্যবহার করে প্রতারণার একটি চক্রান্ত।”
মঙ্গলবার মুক্তাদিরকে ক্যাম্পাসে ডেকে আনা হলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে স্থান ত্যাগের চেষ্টা করেন। বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা তাৎক্ষণিকভাবে সাংবাদিকদের জানান। পরে সাংবাদিকরা ক্যাফেটেরিয়ায় গিয়ে অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেন।
সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে পুরো ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রহমত উল্লাহকে অবহিত করা হয়। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রতারককে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়িতে হস্তান্তর করেন।
এ সময় মুক্তাদিরের কাছ থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে তৈরি করা ভুয়া ভর্তি কাগজপত্র, নকল সিল এবং অন্যান্য সন্দেহজনক দলিল উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে এবং আরও কিছু সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে।”
পরবর্তীতে মুক্তাদিরকে রংপুর মহানগরীর তাজহাট থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে ওসির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।