কাঠালিয়া আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাহাবুব জমাদারের বিরুদ্ধে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সরকারি খাস জমি দখল করে ভবন নির্মাণ করে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভবনটির নির্মাণকাজ চলাকালীন প্রভাবশালী এই নেতার দলীয় প্রভাবের কারণে কাজ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নিলেও এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে নির্মিত বিশাল সেই ভবন। দখলমুক্ত হয়নি সরকারি খাস জমিও। তবে স্থানীয় সাধারণ মানুষ বলছে, সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে এবং অবৈধ ভবনটি উচ্ছেদের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক বলেন, অবৈধভাবে দখলে নেওয়া সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।কাঠালিয়া সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বলেন, আমার যোগদানের অনেক আগেই এই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। অফিসে থাকা ফাইল ঘেঁটে দেখেছি, আমার আগে যেসব ভূমি কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন তারা সরকারি জমি দখলের বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। তারা মূলত রাতের আঁধারে ও সরকারি ছুটির দিনে এই ভবন নির্মাণ করেছে। অনেক চেষ্টা করেও সরকারি জমিতে ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। তবে উচ্ছেদ প্রস্তাব সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে কাঠালিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে তারা বলেন, অবৈধভাবে দখল করা সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে এবং ভবনটি উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আমরা উচ্ছেদ প্রস্তাব পাঠাবো। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মো. মাহবুব জমাদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা হাওয়ায় । তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। সেই সুবাদে কাজে লাগিয়ে ভবন নির্মাণ করে।ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, কাঠালিয়া সদর ইউনিয়ন দক্ষিন আউরা গ্রামে মৌজার সরকারি হাল্ট-খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারের মালিকানাধীন। বর্তমানে এই জমির মূল্য কয়েক কোটি টাকা। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার পর ক্ষমতার দাপট আর দলীয়ভাবে প্রভাব বিস্তার করে জায়গাটির দখল নেন মাহবুব জমাদার। পরে সেখানে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করেন। সে সময় স্থানীয় ভূমি অফিসের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার বাধা দেওয়া হলেও ভবন নির্মাণ থেকে তাকে কোনোভাবেই থামানো সম্ভব হয়নি। উল্টো ভূমি কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করেন বাসা ভাড়াও দেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভাড়া বাবদ জামানত গ্রহণ করে বিপুল পরিমাণ টাকাও আদায় করেছেন। ভবনটির সব নিয়ন্ত্রণ হিসেবে আছেন আওয়ামী লীগ নেত মাহবুব জমাদার । সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে ভবনটির মালিক বলেন, পাসে জায়গা সরকারের জন্য রেখে দিয়েছি। খাস জমিতে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে আমি তো এত কিছু বুঝি না। আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিস্তারিত বলতে পারবেন।এসব বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য মাহবুব জমাদার ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে স্থারীয়রা জানান, গত ৫ আগস্টের পর থেকেই গা ঢাকা দিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই নেতা।