রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০৬:০৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের বৈঠকে ইউপিডিএফের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্রস্তাব দেশদ্রোহীতার শামিল- পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ,বান্দরবান পার্বত্য জেলা।

বান্দরবান প্রতিনিধি
  • Update Time : সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
  • ৬৫ Time View

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ অবদি পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন গুলোর গুলিতে ১ হাজারের উপরে সেনাবাহিনী সহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছে।এছাড়াও নিরপরাধ পাহাড়ি-বাঙালি খুন, হত্যা ও গুমের স্বীকার হয়েছে,৩০ হাজারেরও অধিক।পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন গুলোর হাতে নিহত ও আহতদের স্বজনের পক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ।

সরকারের কাছে উত্থাপিত দাবিগুলো হলো,১) ইউপিডিএফ, জেএসএস ও কে এন এফ সহ পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।

২)দেশদ্রোহী মাইকেল চাকমা, সন্ত লারমা, দেবাশীষ রায় সহ পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সকল গডফাদারদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।

৩)অখণ্ডতা ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে পাহাড়ে সেনাক্যাম্প বৃদ্ধি করা।পুলিশ ও এপিবিএন’কে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জামাদি দিয়ে সেনাক্যাম্পের পাশাপাশি কিছু পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা।

৪)সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান বন্ধে নতুন করে বেশ কিছু বিজিবি বিওপি স্থাপন করা।

৫)পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি বজায় রাখতে ১৯০০ সালের শাসন বিধি বাতিল করে বৈষম্যহীন পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ার উদ্যোগ নেয়া।

রবিবার (১১ই মে) সাকলে বান্দরবান প্রেসক্লাব সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের আয়োজনে ইউপিডিএফ কর্তৃক জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সাথে বৈঠকে তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্রস্তাব করায় সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ,বান্দরবান পার্বত্য জেলা।

সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৃহৎ স্বার্থে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের সুপারিশ করেন পিসিসিপি,জেলা সভাপতি আসিফ ইকবাল।

এসময় গত শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ইউপিডিএফের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের শুরুতে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠনের সংগঠক মাইকেল চাকমা তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্রস্তাব করাকে দেশদ্রোহীতার শামিল বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ,বান্দরবান জেলা সভাপতি আসিফ ইকবাল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে তিনি বলেন, ইউপিডিএফ এই দাবির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে।যা সংবিধান পরিপন্থি ও দেশদ্রোহীতার শামিল। পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।মাইকেল চাকমার নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়।

প্রতিনিধিদলের সদস্যরা হলেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অমল ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও ইউপিডিএফের সদস্য জিকো ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি ও ইউপিডিএফের সদস্য সুনয়ন চাকমা।যারা প্রত্যেকে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(জেএসএস) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) এর নেতা।

আলী রিয়াজের নেতৃত্বে গঠিত ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এর সঙ্গে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর আলোচনার পর, পুরো পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সদস্যদের প্রতি প্রশ্ন রেখে ছাত্র পরিষদের, সভাপতি, আসিফ ইকবাল বলেন, কমিশন কি সত্যিই জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে, নাকি সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক বৈধতা দিয়ে তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ করে দেশের নিরাপত্তা ও শান্তির প্রতি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে?

ইউপিডিএফ, একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে যার শেকড় রয়েছে অত্যাচার, হত্যাকাণ্ড, অপহরণ এবং চাঁদাবাজির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড,সেই দলটিকে,এখন রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে,ইউপিডিএফ এর অন্যতম নেতা মাইকেল চাকমার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যাকাণ্ড, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে বলে জানানো হয়।স্বায়ত্তশাসন দিলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে যা দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় ১৯৭০ সালে এম এন লারমা ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে স্বায়ত্তশাসন ও পৃথক আইন পরিষদের দাবি তুলে। এরপর ৭২ সালে মানবেন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানায়।

শহিদ প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াকে’ও বেশ কয়েকবার স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী এই সংগঠনগুলোর নেতারা।তবে দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে কেউই এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি।

মাইকেল চাকমা তাঁর বক্তব্যে দাবি করেছেন যে ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে।

কিন্তু তাদের অতীত এবং বর্তমান কার্যক্রম বলছে কিছুই পরিবর্তিত হয়নি। তাদের নেতৃত্বে যে আন্দোলনগুলো হয়েছিল, তা দেশের জাতীয় স্বার্থের বিপক্ষে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় ১৯০০ সালের ব্রিটিশ শাসন বিধি বাতিল না হওয়ায় বাঙ্গালিরা ভূমি গ্রহণের অধিকার সহ নানান মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এই অঞ্চলে যদি স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয় তাহলে শহিদ সকল সেনাবাহিনী ও অন্যান্য নিহত আহত সাধারণ জনগণের সাথে উপহাস করার সামিল হবে।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন পিসিসিপি,জেলা,সহ-সভাপতি, মোঃ ইসমাইল,সেক্রেটারি,হাবিব আল মাহমুদ,সাংগঠনিক সম্পাদক,তানভির হোসেন ইমন,অর্থ সম্পাদক,মাহীর ইরতিসাম সহ পিসিসিপি,বান্দরবান জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 nctelevision.com
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin