পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশের উদ্যোগে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানায় রবিবার (১ জুন) বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা। শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি এ টি এম মাহমুদুল হক এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাইওয়ে পুলিশের অপারেশন (পূর্ব) বিভাগের ডিআইজি হাবিবুর রহমান খান বলেন, ঈদে যাত্রী সাধারণ যাতে নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন, সেজন্য হাইওয়ে পুলিশ সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলোতে থাকবে কুইক রেসপন্স টিম, অ্যাম্বুলেন্স ও রেকার সার্ভিস। কোথাও চাঁদাবাজি, হয়রানি বা যাত্রী ভোগান্তি হলে কেউ রেহাই পাবে না—তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গরুবাহী ট্রাক, পরিবহন ও যাত্রী সাধারণ যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে, সে লক্ষ্যে আমরা জিরো টলারেন্সে আছি। তিনি আরও বলেন, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, ওভারস্পিডিং কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। হাইওয়ে পুলিশ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে এবং নিয়মভঙ্গকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, এবারের ঈদে সড়ককে নিরাপদ রাখতে তারা তিন ধাপে কাজ করবে, যানজট ও দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় নতুন কৌশল বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পয়েন্টভিত্তিক যানজট নিরসনে পুলিশ সদস্যরা ঈদের ছুটিতে মাঠে থাকবে। কোনো অবৈধ যানবাহন চলাচল করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ টি এম মাহমুদুল হক জানান, “আমরা ইতোমধ্যে যানজটপ্রবণ পয়েন্ট চিহ্নিত করেছি। দ্রুত যাতায়াত নিশ্চিত করতে পুলিশ সদস্যরা ঈদের ছুটি বাতিল করে দায়িত্ব পালন করবেন। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সিলেট হাইওয়ে রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মির্জা সাইজুদ্দিন, স্থানীয় পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতা আহমেদ চৌধুরী ছায়েদ, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। শ্রমিক নেতা সহ উপস্থিত লোকজন যাত্রী হয়রানি ও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া রোধে পুলিশের সহায়তা কামনা করেন এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করার আশ্বাস দেন। সভায় ওসি মাহমুদুল হক আরও জানান, “মহাসড়কে কিছু লোক আছে যারা মামলা দিলে সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। যেমন অবৈধ যানবাহন আটক করলে বলে এখন শেখ হাসিনা নেই, কেউ নাই, আমরাই সব। আমরা সিএনজি চালাইমু, অটো চালাইমু, আপনারা কই থেকে আসছেন—এরকম নানা ধরনের কথা শুনতে হয় মহাসড়কে। ৫ আগস্টের পর থেকে মহাসড়কে অবৈধভাবে চলাচলকারীরা পুলিশের কথা শুনছে না। একটি অবৈধ যানবাহন আটক করে মামলা দিতে গেলে হতে হয় নাজেহাল।” তিনি সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেন। সভায় হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কে তিন স্তরের ব্যবস্থা থাকবে। ঈদের আগে, ঈদের দিন এবং ঈদের পরেও হাইওয়ে পুলিশ মাঠে থাকবে। দুর্ঘটনা রোধে চালকদের সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সভায় উপস্থিত সবাই মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করার আশ্বাস দেন। ঈদের আগে, ঈদের দিন এবং ঈদের পরে। সভায় স্থানীয়রা পুলিশের এসব পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে সম্মিলিত সহযোগিতার আশ্বাস দেন।